কার এসির কর্মক্ষমতা যাচাই পদ্ধতি (Performance Tent of Car AC)
পারফরমেন্স টেষ্টের মাধ্যমে কার এয়ারকন্ডিশনারের পরিচালনা পদ্ধতি নিরীক্ষা করে। এ পরীক্ষা বা নিরীক্ষা বাতাসের স্বাভাবিক তাপমাত্রা এবং বাতাসের নির্গমন তাপমাত্রার সাথে সম্পৃক্ত। নিচে কর্মক্ষমতা যাচাই সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
কার এসির কর্মক্ষমতা যাচাই পদ্ধতি (Procedure of Performance Test of Car AC )
কার এসির রেফ্রিজারেশন সিস্টেমের চাপের পার্থক্য বের করার জন্য ডাবল মেনিকোল্ড পেজ ব্যবহৃত হয়। পেডাগুলি হোস পাইপের মাধ্যমে সিস্টেমের সার্ভিস ভাতের সাথে যুক্ত করা হয়। অটোমোবাইল যানবাহন চলার সময় এর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং এর কক্ষ তাপমাত্রা সবসময়ই ২১° সে. বা তার বেশি হয় ।
পারফরমেন্স টেস্ট জানার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো লক্ষ রাখতে হবে, যথা-
১) ইঞ্জিনের গতি নির্ধারণের জন্য টেকো মিটার সংযোগ
২) হিমায়ন সিস্টেমের হাই-সাইডে চাপ পরিমাপক সংযোগ
৩) কন্ট্রোল প্যানেলে সর্বোচ্চ কুলিং এবং সর্বনিম্ন কুলিং সেট করা
৪) রোয়ার ফ্যান মোটরের স্পিড সর্বোচ্চ অবস্থানে সেট করা
৫) প্যানেল সেন্টার আউটলেটে থার্মোমিটার যুক্ত করা
৬) ভেহিক্যালের অভ্যন্তরে দরজা ও জানালা বন্ধ রাখা এবং অভ্যন্তরের তাপমাত্রা পরিমাপক থার্মোমিটার সংযোগ
কার এয়ারকন্ডিশনারের হিমায়ন চক্রে কম্প্রেসরকে চালু এবং বন্ধ করার জন্য সাইক্লিং ক্লাচ সিস্টেম থাকে। তবে কিছু উৎপাদনকারী ক্লাচ সাইকেলের হার নির্ধারণ করে দেয়। এটা প্রতি মিনিটে ক্লাচ সাইকেল কতবার অন-অফ হবে তা নির্ধারণ করে দেয়। যখন ক্লাচ- সংযোগবিহীন অবস্থায় থাকে তখন লো-লাইভের প্রেশার বাড়ে এবং হাই-সাইডের প্রেশার কম থাকে। কম্প্রেসর ক্লাচ সংযুক্ত হওয়ার ৫ মিনিট পর নির্গমন বাতাসের তাপমাত্রা থার্মোমিটার থেকে জানতে হবে। অতঃপর উক্ত মান ভেহিক্যাল সার্ভিস ম্যানুয়াল এর সাথে তুলনা করে দেখতে হবে।
কার এয়ারকন্ডিশনিং পদ্ধতিতে যে-কোন ধরনের যানবাহনে তথা অটো ভেহিক্যালসমূহের কম্প্রেসর হিমায়ন পদ্ধতির প্রাণ। কম্প্রেসর ত্রুটিপূর্ণ হলে সিস্টেমের অন্যান্য যন্ত্রাংশসমূহ সচল থেকেও এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমকে কার্যকরি রাখা যায় না। সাধারণত দু'টি পদ্ধতিতে কম্প্রেসরসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশসমূহ পর্যবেক্ষণ করা যায়। যথা-
(ক) দ্রুত পরীক্ষণ পদ্ধতি
(খ) চাক্ষুষ পরীক্ষণ পদ্ধতি
অটো ভেহিক্যালের এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের হিমায়ন পদ্ধতি সাধারণ নিয়মে পরিচালিত হলে হাই-প্রেশার সাইড গরম অনুভূত হয় এবং লো-প্রেশার সাইড ঠাণ্ডা অনুভূত হয়। এ ঠান্ডা বা গরম অনুভব করার জন হিমায়ক লাইনের হোস বা টিউব-কে হাত দিয়ে স্পর্শ করে দ্রুত নিরীক্ষণ করা যায়। হাই-প্রেশার লাইন কম্প্রেসরের ডিসচার্জ থেকে শুরু করে কভেলার হয়ে অরিফিস টিউব বা এক্সপানশন ডিভাইস পর্যন্ত, বা গরম অনুভূত হবে। যদি কম্প্রেসর সঠিকভাবে হিমায়ক সঞ্চালন করে, তবে হাই-প্রেশার লাইন হাত দিয়ে স্পর্শ করলে গরম অনুভূত হয়। আবার অরিফিস টিউব হতে শুরু করে ইভাপোরেটর হয়ে কম্প্রেসরের সাকশন লাইন পর্যন্ত লো প্রেশার সাইড, যা ঠান্ডা অনুভূত হবে। যদি হিমায়ন চক্রে কম্প্রেসর সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয় তবে এ লাইনে হাত দিয়ে স্পর্শ করলে ঠান্ডা অনুভূত হবে। হিমায়ক লাইনের দৈর্ঘ্য এবং অভ্যন্তরীণ গঠন কাঠামোর উপর ভিত্তি করে সিস্টেমের তাপমাত্রার পরিবর্তন হয়। যদি কোন সিস্টেমে কম্প্রেসর চালু অবস্থায় হাই প্রেশার সাইড এবং লো- প্রেশার সাইডে তাপমাত্রার উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন পরিলক্ষিত না হয় তবে বোঝা যায় যে, সিস্টেমে হিমায়কের ঘাটতি আছে অর্থাৎ কম্প্রেসর সঠিক মাত্রায় হিমায়ক সঞ্চালন করতে পারছে না । হিমায়নের কম্প্রেসর পর্যবেক্ষণে দু'টি শর্ত মেনে চলতে হয়-
নিম্নে সাধারণ তাপমাত্রায় ভেহিক্যাল ইন্সপেকশনের দ্রুত নিরীক্ষণের অবস্থান দেখানো হল-
যদি অটো এয়ারকন্ডিশনিং যন্ত্রাদি সঠিক নিয়মে পরিচালিত না হয়, তবে এটি চাক্ষুষ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নির্ণয় করা যায়। অনুপযুক্ত এয়ারকন্ডিশনিং পরিচালনার বিভিন্ন কারণসমূহ ভিজুয়্যাল ইন্সপেকশন দিয়ে বের করা যায় । যেমন-
১। বেল্ট ছিড়ে যাওয়া বা বেল্টের লুজ সংযোগ
২। কন্ডেন্সার বাতাস প্রবাহে বাধা
৩। কম্প্রেসর ক্লাচের লুজ সংযোগ
৪ । কম্প্রেসর মাউন্টিং ব্রাকেট ভাঙ্গা
এ ছাড়াও অনুপযুক্ত পরিচালনার মধ্যে ভিজুয়্যাল ইন্সপেকশনগুলো হল-
১। বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন
২। সরবারহ পরিচালনার অনুপযুক্ত তার
৩। হিমায়ন লাইনে তেলের লিকেজ
৪। ইঞ্জিনের কুলিং সিস্টেমে কাজ না করা ।
অটো এয়ারকন্ডিশনারের হিমায়ন সিস্টেমে কম্প্রেসর পর্যবেক্ষণ একটি বিশেষ ডিভাইসের মাধ্যমেও বিভিন্ন সমস্যাসমূহ পর্যবেক্ষণ করা যায় একে স্ক্যান টুলস বলে, যা A/C Compressor, A/C Clutch, A/C Pressure, Coolent Temperature এবং ফ্যান ইত্যাদির বিভিন্ন সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে। এছাড়া ইলেকট্রনিক টেম্পারেচার কন্ট্রোলার হিমায়ন সিস্টেমে ভুলের সংকেত এবং সমস্যাগুলো চাক্ষুষ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে চিহ্নিত করতে পারে ।
অটোমোটিভ এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমে ব্যবহৃত সকল কম্প্রেসরে শ্যাফট সিল বিদ্যমান। শ্যাফট সিলের প্রধান কাজ হল কম্প্রেসরের অভ্যন্তরে অবস্থিত হিমায়ন ভেল বা কম্প্রেসর অয়েলের লিক রোধ করা। কম্প্রেসরের শ্যাফট সিল সিনথেটিক রাবার, কার্বন ইত্যাদি দিয়ে তৈরি গোলাকার রিং আকৃতির বস্ত্র বিশেষ। সিলসমূহ মসৃণ রাবিং করা কার্বন রিং এর মধ্যে কম্প্রেসর বস্তিতে বোল্ডেড। সিল্ড স্থির কার্বন রিং এর পরিবর্তে ঘূর্ণায়মান কার্বন রিং-ব্যবহার অধিক লাভজনক। বিশেষ কিছু মডেলের কম্প্রেসরে টেফলন সিল ব্যবহার করা হয়।
অটোমোটিভ এয়ারকন্ডিশনিং-এ কম্প্রেসরের ক্র্যাঙ্কশ্যাফট কাস্ট আয়রন সারফেসে সিলিং আইটেম হিসেবে ঘূর্ণায়মান কার্বন রিং এবং মসৃন ও সমতল সারফেস রাবার সিল রাবিং করা থাকে। এভাবে সিল দিয়ে -510 সে থেকে 121° সে. পর্যন্ত তাপমাত্রায় হিমায়ন তেল লিক রোধ করা যায়। কম্প্রেসর চলার সময় ক্র্যাঙ্ক কেইস থেকে কম্প্রেসর অয়েল বেরিয়ে আসতে না পারে এবং বাইরের ফ্রেশ এয়ার কম্প্রেসরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য শ্যাকট সিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি কোন কম্প্রেসরে গ্যাস বা হিমায়ক লিক অনুভূত হয় বা চাপ ঘাটতি ঘটে তবে বোঝা যায় শ্যাফট সিল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই একে পরিবর্তন করা দরকার। দীর্ঘদিন কোন গাড়ি যদি চালানোর প্রয়োজন না হয় বা দীর্ঘদিন এয়ারকন্ডিশনিং ইউনিট বন্ধ রাখার দরকার হয়- তবে কম্প্রেসরের অয়েল সিন সারফেস দিয়ে অয়েল ড্রেন হওয়ার সম্ভাবন থাকে বলে দীর্ঘ সময় বন্ধের ক্ষেত্রে কম্প্রেসর অয়েল ড্রেন করা উত্তম।
কম্প্রেসর ড্রাইভিং বেল্ট টেনশন অ্যাডজাস্টমেন্ট কার এয়ারকন্ডিশনিং এর পারফরমেন্স টেস্টের সাথে জড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ । কম্প্রেসর চলার জন্য যে শক্তির প্রয়োজন হয় তা ইঞ্জিনের ক্র্যাঙ্ক শ্যাফট থেকে সরাসরি ভি-বেল্টের মাধ্যমে পুলিতে স্থানান্তরিত হয়। এখানে আইডলার পুলি কম্প্রেসরকে স্থির গতিতে রেখে স্বাধীনভাবে ক্র্যাঙ্কশ্যাফটের স্পিডের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিয়ন্ত্রণ করে। কম্প্রেসর নিজ পুলি থেকে প্রাপ্ত গতিকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে উচ্চ গতিতে সংকোচন ক্রিয়া সম্পন্ন করে ।
বেল্ট ড্রাইভেন কম্প্রেসরকে এক্সটারনাল ড্রাইভ কম্প্রেসর বলা হয়ে থাকে। ভি-ভোল্টের মাধ্যমে সঞ্চালিত গতি ক্র্যাঙ্কশ্যাফট ও পুলির সাথে দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত রাখতে হয়। অন্যথায় দেখা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কম্প্রেসর, ইঞ্জিন স্পিড থেকে কম গতিতে চলে। ইঞ্জিন বেল্ট পুলি কম্প্রেসর পুলি থেকে ছোট ডায়া মিটারের। ভি- বেল্টড্রাইভ দক্ষতা ও সাবধানতার সাথে ক্রিয়া করে। বড় প্ল্যান্ট অর্থাৎ বড় গাড়ির ক্ষেত্রে বেল্ট ড্রাইভে একাধিক বেল্ট ব্যবহার করতে হয়, যা স্পিড ট্রান্সমিশনে স্লিপ কম হয়। পুলিসমূহ একে অন্যের সাথে যথাযথ অ্যালাইনমেন্টে থাকতে হবে, না হলে বেল্টগুলো খুলে পড়বে অথবা ছিড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ড্রাইভ পুলির সাইজ মোটর এবং ফ্লাইহুইল (যদি থাকে) দিয়ে নির্বাচন করা হয়। সাধারণত পুলিগুলো কাস্ট আয়রন বা স্ট্যাম্প স্টিল দিয়ে তৈরি হয় ।
অনুসন্ধানমূলক কাজ
তোমার প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি যে কোন একটি কার এয়ার কন্ডিশনিং ওয়ার্কশপ পরিদর্শন করে।
পারফরমেন্স যাচাই/রিপেয়ার কর্মকান্ড বিষয়ে নিচের ছকে তোমার মতামত দাও ।
আরও দেখুন...